স্কুল-কলেজে নির্ধারিত টিউশন ফি -আদায় করতে পারবে-মাউশি

0 ২৩২

করোনাকালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো (এমপিওভুক্ত ও এমপিওবিহীন স্কুল-কলেজ) শুধু নির্ধারিত টিউশন ফি আদায় করতে পারবে। এর বাইরে অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনর্ভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ কোনো ফি আদায় করতে পারবে না। করা হয়ে থাকলে, তা ফেরত দিতে হবে অথবা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। একইভাবে অন্য কোনো ফি যদি ব্যয় না হয়ে থাকে, তাহলে তা–ও ফেরত দিতে হবে অথবা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।

আজ বুধবার এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এতে আরও বলা হয়েছে, যদি কোনো অভিভাবক চরম আর্থিক সংকটে পড়েন, তাহলে তাঁর সন্তানের টিউশন ফির বিষয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিশেষ বিবেচনায় নেবে। আর কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন যেন কোনো কারণে ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যত্নশীল হতে হবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় আগের মতো সব ধরনের যৌক্তিক ফি আদায় করা যাবে।

করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি আছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন স্কুলের অভিভাবকেরা করোনাকালে শিক্ষা ফি কমানোর দাবি করে আসছেন। কিন্তু অভিভাবকেরা বলে আসছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাঁদের অনুরোধ রাখছে না।

রাজধানীর মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের একজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, তাঁর সন্তান প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। এর জন্য গত জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর—এই চার মাসের জন্য টিউশন ফি মোট পাঁচ হাজার টাকা ছাড়াও আইসিটি বাবদ ২০০ টাকা, অনলাইন হোম টেস্ট বাবদ ২০০ টাকা এবং মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ফি বাবদ ৪০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এ রকমভাবে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও বিভিন্ন ধরনের ফি নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে কয়েক মাস ধরেই অভিভাবকেরা ক্ষোভ জানিয়ে আসছিলেন। আবার প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ফি না নিলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেবেন কীভাবে?

এ অবস্থায় মাউশি নির্দেশনা দিল। মাউশির বিজ্ঞপ্তিতেও বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নিয়ে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অভিভাবকদের মতভিন্নতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিছু অভিভাবক বলছেন, একদিকে স্কুল বন্ধ ছিল আর অন্যদিকে করোনার সময় তাঁরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। অতএব তাঁদের পক্ষে টিউশন ফি দেওয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তারা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ও স্কুল রক্ষণাবেক্ষণ খাতে প্রতি মাসে তাদের একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতেই হয়।

মাউশি বলছে, এ অবস্থায় অভিভাবকদের অসুবিধার কথা ভাবতে হবে, অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেন বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে না যায় কিংবা বেতন না পেয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন যেন সংকটে পড়ে, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।

মাউশির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০২১ সালের শুরুতেও যদি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এমন কোনো ফি, যেমন টিফিন, পুনর্ভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন, উন্নয়ন ফি নেবে না, যা ওই নির্দিষ্ট খাতে শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যয় করতে পারবে না

আপনার ইমেইল প্রদর্শন করা হবে না।