লামার ইউএনও নূর-এ-জান্নাত রুমিকে রংপুরে বদলি

0 ৭০

মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি

জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরী করার ৭ দিনের মাথায় বান্দরবানের লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নূর-এ-জান্নাত রুমিকে রংপুরে বদলি করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব রাসেল হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়। আদেশে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নূর-এ-জান্নাত রুমিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে পদায়নের জন্য রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ে ন্যাস্ত করা হলো।
গত ৭ জুলাই লামা থানায় দায়েরকৃত সাধারণ ডায়েরীতে নূর-এ-জান্নাত রুমি উল্লেখ করে বলেন, সাংসারিক মনোমালিন্য এবং কর্মস্থলে অন্যায়ভাবে প্ররোচিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রলোভনপূর্বক হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করেন স্বামী। একপর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে সামাজিক মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ জীবনের কথা চিন্তা করে গত ২৪ জুন রাতে আমি আমার স্বামী এটিএম ওমর ফারুককে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক মৌখিকভাবে তালাক দেই। এতে তিনি ক্ষুদ্ধ ও উত্তেজিত হয়ে আমাকে হত্যা করবে অথবা নিজে আত্মহত্যা করে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি দেন। পরে ৬ জুলাই আমি তাকে ডাকযোগে রেজিস্ট্রার্ট এডি সহকারে তালাকনামা প্রদান করি। তালাকনামা পেয়ে ৭ জুলাই সকাল ১০টার দিকে সে আমার লামা উপজেলা সরকারি বাসভবনে এসে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেন। আমি প্রতিবাদ করলে তিনি আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারতে আসেন। এ সময় আমার চিৎকার শুনে ঘরের কাজের বুয়া সেখানে উপস্থিত হলে কোন রকম প্রাণে বেচে আমার সন্তানকে নিয়ে অন্য রুমে চলে যাই। এমনকি পরে তিনি সময় সুযোগ বুঝে আমাকে মেরে পঙ্গু করবে, নিজে আত্মহত্যা করে আমাকে ফাঁসাবে এমন হুমকি দিয়ে চলে যান। তিনি আমার সন্তান রাহিবকে জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে লুকিয়ে রেখে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপহরণ মামলা করবে বলেও হুমকি দেন। তাই এ অবস্থায় আমার সন্তানকে বাসায় রেখে কর্মস্থলে যোগদান করা ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পরে এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করি। সাধারণ ডায়েরী করার পর এ বিষয়ে বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে আলোচনায় আসেন নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি।
প্রসঙ্গত, ৩০ তম বিসিএস এর কর্মকর্তা নূর-এ-জান্নাত রুমি ২০১২ সালের ৩ জুন সহকারী কমিশনার হিসেবে ঢাকায় প্রথম যোগদান করে পরে পোস্টিং হন জামালপুর জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে। সেখানে ওমর ফারুককে বিয়ে করেন তিনি। পরে সেখান থেকে বদলি হয়ে ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর যোগদান করেন বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। ২০১৫ সালে সদর উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে বদলি হন নূর-এ-জান্নাত রুমি। এরপর পদোন্নতি পেয়ে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আরডিসি হিসেবে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগদান করেন। সেখান থেকে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে লামা উপজেলায় যোগদান করে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

 

আপনার ইমেইল প্রদর্শন করা হবে না।