লংগদুতে ঈদকে সামনে রেখে বিপনি বিতানে বেচা-কেনার ধুম
বিপ্লব ইসলাম,লংগদু,(রাংগামাটি)
পবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র দিন কয়েক বাকি। ঈদকে কেন্দ্র করে রাংগামাটির লংগদু উপজেলার সর্বত্র জমজমাট হয়ে উঠেছে কেনাকাটা। সেইসাথে মার্কেট আর বিপণীবিতানগুলো সেজেছে নতুন সাজে। প্রতিটি মার্কেটে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পোশাকে ভরে উঠেছে। শোভা পাচ্ছে বাহারি রং আর ডিজাইনের পোশাক। জমজমাট বেচাকেনা হওয়ায় প্রতিটি মার্কেটে যেন ক্রেতাদের ভীড়। পরিবারের সদস্য আর স্বজনদের চাহিদা মেটাতে পছন্দের পোশাকের খোঁজে ছুটছেন তারা এক দোকান থেকে অন্য দোকানে।
এদিকে এবারের ঈদকে সামনে রেখে লংগদু উপজেলার মার্কেটগুলো দখল করে আছে দেশিয় পোশাকের পাশাপাশি ভারতীয় সহ ভিন্ন দেশের পোশাক। এরমধ্যে নারীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে আলিয়া কাট, নায়রা কুর্তি, আঘানূর থ্রিপিস,মারিয়াবী ও ইত্যাদি। এবার রোজার শুরু থেকেই কেনা বেচা শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বেজায় খুশি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,লংগদু উপজেলার বৃহত্তম মাইনী মুখ বাজারের বিভিন্ন দোকানে নারী পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। চলছে জমজমাট কেনা বেচাও।
এবারের ঈদে তরুণীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে, আলিয়া কাট, নায়রা, ঘারারা ও সারারা, নূরস, আঘানূর, মারিয়াবি, পার্সি, দিল্লি বুটিকস, ছানাছাফিনাসহ নানা নামের থ্রিপিস। ওইসব নারীদের কাছে বেশী বিক্রি হচ্ছে।
তাছাড়া মাইনী মুখ সহ উপজেলার বিভিন্ন ছোট খাটো বাজারের দোকান গুলোতে শোভা পাচ্ছে স্কাট, টপস, থ্রিপিচ, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট জয়পুরি, ছেলেদের নবাবী ও সুলতা পাঞ্জাবী, ফতুয়া, টি শার্ট পেন্ট এবং ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য বাহারি ডিজাইনের তৈরী পোশাক, জামদানি বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট জয়পুরি শাড়ী।
মাইনী মুখ বাজারের সাতকানিয়া গার্মেন্টস এর ব্যবসায়ী মো.শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার বেচা-কেনা অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হলেও মোটামুটি হচ্ছে তবে আলহামদুলিল্লাহ।
মাইনী মুখ বাজারের মোর্শেদ গার্মেন্টস এর ব্যবসায়ী মোর্শেদ জানান , গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ঈদের কেনা কাটা রোজা শুরু থেকেই মোটামুটি জমে উঠেছে। দোকানে ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী নিত্য নতুন বাহারি ডিজাইনের পোশাক আনা হয়েছে। ক্রেতাদের ভিড় থাকায় সকাল ৯ টা থেকে রাত ৮ টা পযর্ন্ত দোকান খোলা রাখা হয়। দিন দিন বেচা কেনা বৃদ্ধি পাওয়ায় খুবই খুশি।
সাতকানিয়া গার্মেন্টস এর কর্মরত এক বিক্রেতা জানান, এই ঈদকে কেন্দ্র করে রোজার আগেই থ্রপিচ, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতান, সিল্ক বেডশিট, পর্দার কাপড়, লুঙ্গী ,থান কাপড়সহ নানা প্রকারের মালামাল উঠানো হয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলণায় এবার বেচা বিক্রি ভালো হচ্ছে বলে জানায়।
লংগদু উপজেলার রাঙিপাড়া এলাকার গৃহিণী নুর আয়শা বেগম বলেন, এবার ঈদে তার মেয়ের পছন্দ ভারতীয় আলিয়া কাট ড্রেস। বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে কয়েকটি ড্রেস দেখে পরে ৩,২০০ টাকায় আলিয়া কাট কিনেছি। এই ড্রেস কিনতে পেরে মেয়ে মহাখুশি।
মো: ইয়াছিন আলী বলেন, অনেক ঘুরে দেখে ছেলের জন্য শার্ট ও প্যান্ট স্ত্রীর থ্রি পিচ এবং দুই মেয়ের জন্য প্রিন্টের থ্রি পিচ কিনে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন এবার ঈদের পোশাকের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি।
গৃহিণী মরিয়ম আক্তার বলেন, ছেলে ও মেয়ের জন্য ঈদ পোশাক কিনতে বাজারে আসা। অনেক পোশাক দেখেছি কিন্তু মনে হচ্ছে পোশাকের অনেক দাম। অবশেষে ২ হাজার ৭শ টাকা দিয়ে একটি থ্রিপিচ আর ছেলের জন্য জিন্স প্যান্ট আর গেঞ্জি কেনা হয়েছে । এবার অনেক আগ থেকেই দোকানে ভিড় বেড়ে যাওয়ায় আগেবাগে কেনা হয়েছ। কারণ গত বছর ভিড়ের কারণে পোশাক কিনতে খুবই কষ্ট হয়েছে। তাই এবার আগে আসা।
এদিকে ঈদে রাংগামাটির লংগদু উপজেলায় গজ কাপড়ের কদরও কমেনি। বেশী ভাগ নারীই নিজেদের মনের মতো করে পছন্দের নকশা তৈরী করে গজ কাপড় কিনে পোশাক বানাচ্ছেন। এজন্যই এখন গজ কাপড়ের দোকানে উপচে পড়া ভিড়। একরঙ্গা, চিকেন জর্জেট,মাখন সিল্ক, ক্রাশড চায়না জর্জেট, টিসুসহ বিভিন্ন রকমের গজ কাপড় বিক্রি হচ্ছে দোকানগুলোতে। তাছাড়া জুতা,চুড়ি, কসমেটিকস আর ফুটপাতের দোকান গুলোতে সমান তালে স্বল্প আয়ের লোকজন কেনা কাটা করছেন।