লংগদুতে প্রতিমা গড়তে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

১৯৮

সাকিব আলম মামুন

আসন্ন শারদীয় পূজাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন লংগদুরের মৃৎশিল্পীরা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাঁদামাটি, খড়, কাঠ, বাঁশ আর সুতলি দিয়ে প্রতিমা তৈরিতে তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার উপজেলার ৩টি মন্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে।

মাটি আর হাতের ছোঁয়ায় কাঠামো তৈরির কাজ চলছে। প্রতিমার প্রতিরূপ ফুটে তোলার কর্মে ব্যস্ত রয়েছেন কারিগররা। সনাতন সম্প্রদায়ের কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছে কেনাকাটায়, আবার কেউ নাড়ু-মোয়া তৈরির জন্য।

জানা যায়, উপজেলায় শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে লংগদুতে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। শিল্পীদের হাতের কারুকাজে প্রতিমার কাঠামো সেজে উঠেছে। প্রতিমার কারিগররা আট থেকে ১০টি করে প্রতিমা নিয়ে রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে মন্ডপে-মন্ডপে চলছে নানা আয়োজন। আর কয়েকদিন পর রঙের আঁচড়ে সেজে উঠবে প্রতিমাগুলো। শারদীয় দুর্গাপূজার আর মাত্র ক’দিন বাকি। এরই মধ্যে লংগদুতে উৎসবের প্রতি ঝুঁকে পড়তে দেখা যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের।

সাজসজ্জা করতে মন্দির মন্ডপে ডেকোরশনের কাজ সবখানে শুরু না হলেও আয়োজন চলছে মাপজোকের। ভক্তদের প্রবেশের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কারুকাজে বিরাট গেট তৈরি করা হচ্ছে। বাঁশ, কাঠ, কাপড় দিয়ে মন্ডপের শোভা বাড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছে মন্ডপ কর্তৃপক্ষ।

উপজেলার বিপণী বিতান গুলোতে পূজার কেনাকাটা করতে ভিড় বেড়েছে আগের থেকে দিগুণ। পূজার জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কেনা শুরু করেছে নতুন জামাকাপড়। পাদুকা থেকে প্রসাধনী সবই মনের মতো করে খুঁজে ক্রয় করছেন তারা।

আবার কাটা কাপড়, শাড়ি, নারীদের সাজের প্রয়োজনীয় গহনা, তৈরি পোশাক, টেইলার্স, নতুন কাপড়ের দোকানেও ভিড় বেড়েছে। এবার কেনাকাটায় নারীদের প্রথম পছন্দ শাড়ি। আর ছেলেরা ধুতির সঙ্গে রং মিলিয়ে নিচ্ছেন পাঞ্জাবি। আর তরুণরা জিন্স ও টি-শার্টে ঝুঁকেছেন। তরুণীরা মজেছেন ভারতীয় বিভিন্ন রঙের থ্রি পিসে। আর শিশুদের তৈরি পোশাক বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে পূজা উপলক্ষে অনেকেই ছুটছে স্বর্ণের দোকানে।

লংগদু পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবছর ৩টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মন্ডপ ৩টি হলো- শ্রী শ্রী হরি মন্দির মাইনী, শ্রী শ্রী শিব মন্দির জালিয়া পাড়া ও শ্রী শ্রী রাধা কৃষ্ণ সেবাশ্রম মন্দির লংগদু।

আগামী পহেলা অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। আর ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসব।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অজিত কুমার নন্দী জানান, এবারও প্রতিটা মন্দিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক থাকবে। এর পাশাপাশি নিজ দায়িত্বে প্রতিটি মন্দিরে কমিটির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ও সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে কম আলোকসজ্জা ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে।

লংগদু থানা পুলিশ অফিসার (ওসি) মোঃ আরিফুল আমিন জানান, উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আয়োজক কমিটির পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে টহল টিমও সতর্ক হয়ে মাঠে কাজ করবে।

মন্তব্য বন্ধ আছে তবে ট্র্যাকব্যাক ও পিংব্যাক চালু রয়েছে।