৯ বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন সাজা দিলো নারী-শিশু ট্রাইব্যুনাল
alokitolangadu@gmail.com
মো.গোলামুর রহমান
রাঙামাটির লংগদুতে ৯বছর বয়সী প্রথম শ্রেণীর এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত রুবেল নামের এক আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে রাঙামাটির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত।
বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ.ই.এম ইসমাইল হোসেন আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। এসময় রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভি, আসামীপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট আবছার আলীসহ অন্যান্য আইনজীবিগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিচারক রায় ঘোষণার পূর্বে মামলার সারমর্ম তুলে ধরে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ উপস্থাপিত মৌখিক সাক্ষ্য দালিলিক সাক্ষ্য ও ফরেনসিক সাক্ষ্য দ্বারা গত ২৭/০৮/২০১৬ খ্রি: তারিখ সকাল অনুমান ১১ টার সময় লংগদু থানাধীন ৪নং গাউছপুর ফরেষ্ট অফিস আগর বাগান সংলগ্ন জঙ্গলে আসামী মো: রুবেল কর্তৃক ৯ বছর বয়সী শিশু ভিকটিমকে ধর্ষণ করে যৌনাঙ্গে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
এসময় আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ধর্ষকের সাথে ধর্ষণের শিকার ভিকটিমের বিবাহের সুযোগ প্রদান করা হলে সমাজে অপরাধীরা অর্থ ও প্রভাবের বিনিময়ে অপরাধ করে পার পেয়ে যাবেন বিধায় আসামীর উক্ত যুক্তি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
এরপর বিচারক তার রায় পড়ে শুনান।
রায়ে আসামী মো: রুবেল (বর্তমান বয়স-৩২) কে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৯(১) ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে উক্ত অপরাধের দায়ে আসামীকে যাবজ্জীন সশ্রম কারাদন্ড এবং এর অতিরিক্ত ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করে বলেন, আসামীকে রায় ঘোষণার ৯০দিনের মধ্যে উক্ত জরিমানার অর্থ বিধি মোতাবেক জমাদানের নির্দেশ প্রদান করেন। উক্ত জরিমানার অর্থ এই মামলার শিশু ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাপ্ত হবেন।
এদিকে এই রায় ঘোষণার পরপরই আসামীর স্ত্রীসহ স্বজনরা হাউ মাউ করে কান্না করে উঠেন। আসামীর স্ত্রী নাজমা জানান, তার স্বামী সম্পূর্ন নির্দোষ এবং ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
অপরদিকের আসামীপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট আবছার আলী জানিয়েছেন, আমরা আদালতের এই রায়ে ক্ষুব্ধ, তিনি বলেন, মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষনের ব্যাপারটি স্পষ্ট নয়, তারপরও আমরা বাদি-বিবাদী আদালতে আবেদন করেছিলাম, বিজ্ঞ আদালত আজ আমাদের সেই আবেদনটি অস্বীকার করেছেন। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো এবং আশা করছি সেখান থেকে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।