২৭বছরেও পাকুয়াখালী ট্রাজেডির বিচার পায়নি ৩৫ কাঠুরিয়া পরিবার
alokitolangadu@gmail.com
মো.গোলামুর রহমান
রাঙ্গামাটির লংগদুতে ২৭ বছরেও বিচার হয়নি ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যার। লংগদু উপজেলা ও বাঘাইছড়ি উপজেলার মধ্যোবর্তী পাকুয়াখালীতে ৩৫ জন বাঙালী কাঠুরিয়া গণহত্যার বিচারের দাবীতে লংগদু উপজেলা সদরে শোক র্যালী, দোয়া মোনাজাত ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ লংগদু উপজেলা কমিটি।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে লংগদু উপজেলা পরিষদের প্রান্ত থেকে শোক র্যালী বের করা হয়। শোক র্যালীটি প্রধান সড়ক ঘুরে উপজেলা পরিষদের কাঠুরিয়াদের গণ কবরের সামনে এসে কবর জিয়ারত ও দোয়া মুনাজাতে শরীক হয়। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন গাঁথাছড়া বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের সুপার হাফেজ মাওলানা ফোরকান আহমেদ, পরে উপজেলা মাঠের একপাশে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।
পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস এর আয়োজক কমিটি লংগদু শাখার আহবায়ক খলিলুর রহমান এর সভাপতিত্বে এবং নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির মহা সচিব আলমগীর কবির এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোরশেদা বেগম,ট্রাজেডি দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন নাগরিক পরিষদ লংগদু উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এ,বি,এস মামুন ও সাবেক লংগদু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা নাছির উদ্দীন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পারিষদ রাংগামাটি জেলা শাখার সভাপতি হাবিব আজম ও পাকুয়াখালীতে হত্যা কান্ডের শিকার হওয়া পিতা হারা রাকিব হাসান ও পত্যক্ষ দর্শী আব্দুল হাকিম বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, পাকুয়াখালী গণহত্যা সহ পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে, পাকুয়াখালী গণহত্যায় নিহতদের পরিবারদেরকে পূর্ণবাসন করা নিহতদের পরিবার থেকে যোগ্যতানুযায়ী চাকরির দেওয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সকল প্রকার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা, পার্বত্য বাঙালীদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করা, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে সমান সংখ্যক সদস্য নিয়োগ করে ভূমি কমিশন পূর্ণঘঠন করার দাবী জানান।
পরিশেষে পাকুয়া খালিতে নিহত ৩৫ কাঠুরিয়ার পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক সহায়তা ও দুপুরের খাবার পরিবেশন করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এই তারিখে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন শান্তিবাহিনী নামক সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলার ৩৫ নিরীহ বাঙালী কাঠুরিয়াকে বাঘাইছড়ি ও লংগদুর মধ্যবর্তী এলাকা গহীণ অরণ্য পাকুয়াখালী নামক স্থানে মিটিংয়ের নামে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যাকান্ড চালিয়ে জঘন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। সে সময় ইউনুছ মিয়া নামে এক বাঙালী পালিয়ে আসতে পারায় এত বড় হত্যাকান্ডের খবর জানা সম্ভব হয়েছিল এবং সেই কাঠুরিয়াদের লাশ উদ্ধার করা সক্ষম হয়েছিল। সেই থেকে পার্বত্য বাঙালীরা এই তারিখটিকে কাঠুরিয়া হত্যাকান্ড দিবস হিসেবে পালন করে এবং এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে আসছে বাঙালীরা, পার্বত্য চট্টগ্রামে এত বড় হত্যাকান্ডের ২৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও কারো কোন বিচার না হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত পার্বত্য বাঙালীরা।