সাজেক ভ্রমণ শেষে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় দুই হাজারের বেশি পর্যটক নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছেছেন,

৫২৭

ডেস্ক রিপোর্টঃ

সাজেক ভ্রমণের আনন্দময় মুহূর্ত শেষে ফেরার পথে দূর্ঘটনা বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে দীঘিনালা জোন সদর থেকে সেনাবাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তায় সাজেক থেকে ফেরত আসা পর্যটক বহরটি খাগড়াছড়ি সদরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় আটকে পড়া দুই হাজারের বেশি পর্যটককে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বাস্তবায়ন করা হয়। জানা গেছে, সাজেক থেকে খাগড়াছড়ি ফেরার পথে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে চলমান সড়ক অবরোধের কারণে পর্যটক বহরের যাত্রা স্থগিত করা হয়েছিল। অবরোধের কারণে হাজার হাজার পর্যটক দীর্ঘসময় রাস্তার পাশে আটকা পড়ে থাকলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া মাত্রই দীঘিনালা জোন উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ মেহেদি হাসানের নির্দেশনায় পুনরায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে বহরটি খাগড়াছড়ি সদরে নিয়ে আসা হয়।
পর্যটক বহরের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার একশো। তারা ১৪টি বাস, ৩০০টি চাঁদের গাড়ি, সিএনজি, জিপ ও পিকআপ এবং ৮০টি মোটরসাইকেলের মাধ্যমে খাগড়াছড়ি সদরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। বহরটির নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে যৌথ টহল কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সেনা কর্মকর্তা মেজর মো. রাকিব মল্লিক এই যৌথ টহলের নেতৃত্ব দেন এবং পরিস্থিতি সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সকল বাহিনীকে তৎপর থাকতে নির্দেশনা প্রদান করেন। তাদের নিবিড় তৎপরতার কারণে রাতের অন্ধকারে বহরটি নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, “সাজেকে আটকে পড়া দুই হাজারের বেশি পর্যটককে সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাতেই খাগড়াছড়ি সদরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, কিন্তু যৌথ উদ্যোগ এবং সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা এটি সম্পন্ন করতে পেরেছি।”

প্রসঙ্গত, সড়ক অবরোধ ও সাময়িক অশান্তি প্রতিরোধের জন্য দীঘিনালা জোন ও থানা কর্তৃপক্ষের বিশেষ টহল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দীর্ঘ দূরত্বে চলাচলরত পর্যটক এবং সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা নিয়মিতভাবে কনট্রোল পয়েন্ট স্থাপন ও নজরদারি চালাচ্ছেন। সড়ক অবরোধের পেছনে রাজনৈতিক বা সামাজিক যে কোনো ধরনের প্রভাব এড়াতে এই টহল কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নিরাপত্তা বাহিনী অবরোধ মোকাবেলায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন এবং আশেপাশের এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত পাহারাদারি জোরদার করেছেন, যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সংঘটিত না হয়।
পর্যটক বহরের যাত্রা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বিত উদ্যোগের ফল। পরিবহন এবং চলাচলের সকল ব্যবস্থাপনা সুসংহতভাবে করা হয়েছে। পরিবহন যন্ত্রের সার্বিক প্রস্তুতি যেমন বাস, চাঁদের গাড়ি, সিএনজি, জিপ, পিকআপ এবং মোটরসাইকেল নিরাপদভাবে পরিচালিত হচ্ছে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। পর্যটকদের ঝুঁকি ও অস্বস্তি কমাতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রত্যেক গাড়ি ও মোটরসাইকেলকে পর্যবেক্ষণ করেছে। বহরের মধ্যে জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে যাতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেওয়া যায়।

এই পুরো প্রক্রিয়ায় দীঘিনালা জোন, স্থানীয় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ করেছে। তারা অবরোধ মোকাবেলা, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং পর্যটক বহরের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যুগপৎভাবে পরিকল্পনা ও তৎপরতা দেখিয়েছে। এমন উদ্যোগ পাহাড়ি পর্যটন এলাকায় নিরাপত্তা এবং পর্যটক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সামনের দিনগুলোতেও প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করে পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং চলাচল নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

মন্তব্য বন্ধ আছে