মিথ্যা গুজব থেকে বাঁচতে থানায় অভিযোগ 

alokitolangadu@gmail.com

0 ২১০
আলোকিত লংগদু ডেক্সঃ

রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নের মোঃ সেলিম(২৩)মোটরসাইকেল চালক, পিতা-মৃত মমরুজ আলী, কাকবাড়িয়া গুলসাখালী সে ১৬ নভেম্বর রাত রাত অনুমান ০৯.০০ টায় তার বাড়িতে যাওয়ার পথে ৩ জন বাঙ্গালি তাকে ধরে হাত,পা, মুখ ও চোখ বেধে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

ঘটনার পরদিন ১৭ নভেম্বর ৭.৩০ টার সময় বাঘাইছড়ি উপজেলাধীন রুপকারী ইউপিস্থ দুই কিলো এলাকায় পাকা রাস্তার উপর ভিকটিম মোঃ সেলিম(২৩) হাত  বাধা অবস্থায় দৌড়ে আসার সময় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন।

এবিষয়ে সেলিমের সাথে কথা হলে সেলিম জানায়, আমি নতুন মটর সাইকেল নিবো এবিষয়ে আমার ভাইয়ের সাথে বাজারে কথা বলে এক বিকাশের দোকান থেকে দশ হাজার টাকা নিয়ে মোট ১লক্ষ ১৮ হাজার টাকা সাথে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে আমার বাড়ির সামনে একটু ঝুপড়ী সেখানে গাড়ি স্লো করে বাসায় ঢুকতে হয়। যখন আমি গাড়ি স্লো করি তখন একজন লাফ দিয়ে আমার গাড়ির সামনে এসে দাড়ায়, আরেকজন পিছন থেকে আমাকে আঘাত করে বেহুশ করে ফেলে, এরপর আমি আর কিছু জানিনা। যখন জ্ঞান ফিরে তখন দেখি আমার হাত পা চোখ বাঁধা অবস্থায় বোটে করে কোথাও নিয়ে যাচ্ছে। দুই আড়াই ঘন্টা বোট চালানোর পর সিএনজিতে করে জঙ্গলে একটি ঘরে নিয়ে যায়।

এর মাঝে আপনি কিছু বুঝতে পেরেছেন কে আপনাকে নিয়ে যাচ্ছে? সেরিম বলে তারা মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন তখন হানিফ, সবুজ,জামাল তিনজনের নাম শুনতে পাই। পরে তারা আমাকে হাত পা চোখ বাঁধা অবস্থায় ঘরে বন্ধি করে রেখে চলে যায়।  এর মাঝে আমি নিজে নিজে চেষ্টা করে চোখ ও পায়ের বাধন খুলে দরজা খুলার চেষ্টা করি। কিছুক্ষণ পর একজন এসে দরজা খুল্লে তাকে কমরে লাথি মেরে আমি দৌড়ে পালিয়ে যাই,দৌড়াতে দৌড়াতে মূল সড়কে আসলে স্থানীয় জনগণ আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।

তবে এক প্রশানের জবাবে সেলিম বলে, আমিতো যাদের নাম শুনেছি তারা আমার আগের শশুর ও বড় ভাই ছিলো, আমিতো বলছিনা যে তারাই আমায় অপহরণ করেছে।  আমি তাদের নাম শুনেছি তাই তাদের নাম বলেছি। আমি চাইলেতো এটাও বলতে পারতাম তারাই আমাকে অপহরণ করছে আমি মিথ্যা কেন বলবো। তাছাড়া ওনারা বাচ্ছার ভরনপোষণ বাবাদ যে টাকা সেটা আমি এখন দিতে পারবো আমি এখন সক্ষম।

এবিষয়ে ঘটনার ১১দিন পর আজ ২৬ নভেম্বর সেলিমের কাছে জানতে চাইলে থানায় কোন অভিযোগ করেছে কিনা? সেলিম বলে এখনো করতে পারিনি, আমরা গিয়েছিলাম স্যার ছিলোনা তাই করিনি।

সেলিমের দেওয়া তথ্যমতে হানিফ, সবুজ, জামালের সাথে কথা হলে তারা বলে সেলিম আমাদের বাড়ির জামাই ছিলো, ওর ওরশজাত একজন ছেলেও আছে আমাদের ঘরে।  তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে সেলিমের সাথে আমাদের মেয়ের ডিভোর্স হয়ে যায়। যেদিন রাতে এঘটনা ঘটে ঐদিন রাতে আমরা তিনজনই ভাইবোনছড়া গাছ ব্যবসায়ী মমিনের বাড়িতে ছিলাম। আমরা এবিষয়ে কিছুই জানিনা, আমরা যখন রাতে খাবার খেতে বসি তখন মমিন সওদাগর মোবাইলে একটা ভিডিও দেখিয়ে বলছে তোমাদের গুলশাখালীর ছেলে অপহরণ হয়েছে দেখো সেখানে তোমাদের নাম বলছে। হানিফ বলছে আমি মেয়ের বাবা বয়সও হয়েছে আমরা গরিব মানুষ কাজকর্ম করে চলি। সেলিম যে ভাবে ফেসবুকে মিথ্যা কথা আমাদের পরিবারের নামে ছড়িয়েছে তা জঘন্য কাজ করেছে৷ আমরা যেখানে কাজ করতাম এখন তারা আমাদের আর কাজে নেয় না, বলে আমরা সন্ত্রাসী। আমাদের পরিবারকে সামাজিক ভাবে লাঞ্ছিত করেছে। আমার পরিবারের পক্ষে আমরা লংগদু থানায় মিথ্যা অপবাদের কারণে সামাজিক মানমার্যাদা নষ্ট করার ফলে সেলিমের বিরুদ্ধে ৫০ লক্ষ টাকার মানহানি অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরাও চাই আসল অপরাধী কে বের হয়ে আসুক। সেলিম নিজে থেকে এমনটা সাজিয়েছে কিনা সেটাও খুঁজে বের করা দরকার। কারণ ডিভোর্সের পরে আমার নাতিকে( সেলিমের ছেলে)কে কোড থেকে সেলিম কে নির্দেশ দিয়েছে ভরনপোষণ বাবদ প্রতি মাসে ৩হাজার করে টাকা দিতে, সে শুধু এক মাস টাকা দিয়েছে এরপরে আর কোন টাকা দেয়নি। যার ফলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে টাকা না দেওয়ার সুযোগ খুজতেছে সে। তারা বলছে আমরাই এসব কাজ করিয়ে টাকা নিয়েছি।

এবিষয়ে গাছ ব্যবসায়ী মমিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনার দিন রাতে আমি হঠাৎ ফেসবুকে ঘটনাটি দেখতে পাই।পরে দৌড়ে ঘরে আসি তারা ঘরে আছে কিনা দেখার জন্য, দেখি তারা খাবার খাচ্ছে। তাদের বিষয়টি দেখালাম তরাও হতবাক হয়েছে এটি দেখে।

এপ্রসঙ্গে লংগদু থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইকবাল উদ্দীন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি আমাদের পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে ঘটনা স্থল থেকে পরে থাকা মোবাইল,মটর সাইকেল উদ্ধার করেছে। আমরা ভিকটিমের পক্ষ থেকে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। তবে যাদের নাম সেলিম বলেছে তারা তাদের মানহানির অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। আমরা তদন্ত করছি, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

আপনার ইমেইল প্রদর্শন করা হবে না।