গ্যালারি জুড়ে উৎসব দীর্ঘ সময় না যাওয়ার তৃপ্তি পূরণ।

৮৫

জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণ ক্ষমতা ১২ হাজারের বেশি। করোনার কারণে লম্বা সময় মাঠে দর্শক ছিল না। ফলে বিপিএলসহ বেশ কয়েকটি সিরিজে ক্রিকেট উন্মাদনা দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছে দর্শকরা। দেশে করোনার প্রকোপ এখন অনেকটাই কমে এসেছে। ফলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে পরীক্ষামূলকভাবে দর্শকদের মাঠে আসার অনুমতি দেওয়া হয়। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে চার হাজার টিকিট ছাড়া হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন বিসিবির কর্মকর্তারা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজারে। শুক্রবার ছুটির দিনে দর্শকরা ভিড় করেছে স্টেডিয়ামে। এম এ আজিজ স্টেডিয়াম এবং সাগরিকা বিটাক মোড়ের বুথে বিক্রি করা হয় টিকিট। ফলে এই দুই জায়গায় টিকিটের জন্য লম্বা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ক্রিকেট প্রেমীদের। যেহেতু টিকিটের তুলনায় টিকিট প্রত্যাশীর সংখ্যা অনেক বেশি তাই টিকিটের জন্য দারুণ প্রতিযোগিতা চলে। বলা যায় একটি টিকিট যেন সোনার হরিণে পরিণত হয়েছিল। তারপরও যারা টিকিট পেয়েছে তারা যেন নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছে।
দ্বিতীয় ওয়ানডের জন্য আট হাজার টিকিট ছাড়া হলেও পশ্চিম গ্যালারীতে কোনো দর্শককে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পূর্ব গ্যালারীর দ্বিতীয় তলায় দর্শকদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। ফলে চরম ভিড় দেখা গেছে এই গ্যালারীতে। তার উপর প্রচণ্ড রোদ আর ঠাসাঠাসি করে বসার কারণে বেশ অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয় দর্শকদের। বেলা ১১ টা থেকে খেলা শুরু হওয়ায় স্টেডিয়ামে আগত দর্শকদের সবচাইতে বড় বিড়ম্বনায় পড়তে হয় খাবার নিয়ে। কারণ গ্যালারীতে খাবারের দাম বেশি রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে অনেকেই।
বাংলাদেশ দল দারুণ এক জয় দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করেছে। প্রথম ম্যাচে জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ বেড়ে যায় অনেকখানি। তাই অনেক প্রতিযোগিতা করে টিকিট সংগ্রহ করেছে দর্শকরা। আর সে টিকিটে মাঠে গিয়ে দারুণ তৃপ্তি পেয়েছে সেটা বলতেই হবে। কারণ লিটন দাস অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দর্শকদের আনন্দ দিয়েছেন। তাইতো জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালরিতে বয়ে গেছে আনন্দ ধারা। ক্রিকেট উন্মাদনায় মেতে উঠেছে চট্টগ্রামের দর্শকরা। নানা রঙে, নানা ঢঙে জার্সি পড়ে, পতাকা হাতে নিয়ে দর্শকরা বাংলাদেশ দলকে সমর্থন জানাতে মাঠে আসে। দিনের প্রথম ভাগে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংটা দারুণ উপভোগ করেছে দর্শকরা। চার আর ছক্কার ঝড়ে দর্শকদের নাচিয়ে ছেড়েছেন লিটন এবং মুশফিক। টিকিট সংগ্রহ আর মাঠে প্রবেশের বিড়ম্বনা তাই নিমিষেই শেষ হয়েছে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং দেখে।
তবে চট্টগ্রামের ক্রিকেট প্রেমীদের দাবি যেন টিকিটের সংখ্যা বাড়ানো হয়। যদিও সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে নয় হাজার টিকিট ছাড়া হবে বলে জানিয়েছে বিসিবির কর্মকর্তারা। যদিও তাও বেশ অপ্রতুল। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পুরোদমে টিকিট না ছাড়ালেও গতকাল টিকিট ছাড়া প্রচুর দর্শক ঢুকেছে গ্যালারীতে তেমন অভিযোগ করেছে টিকিট ধারীরাই। দর্শকদের অভিযোগ পুলিশ টিকিটধারীদের নানাভাবে হয়রানি করেছে। অথচ টিকিট ছাড়া মানুষ ঢুকতে সহায়তা করেছে। গ্যালারীতে সরেজমিনে গিয়ে সে সত্যতাও মিলেছে। অনেকেরে সাথে কথা বলে জানা গেছে তারা টিকিট ছাড়াই প্রবেশ করেছে কারো না কারো সহায়তায়। তারপরও দর্শকরা তৃপ্তি নিয়েই ফিরতে পেরেছে। কারণ বাংলাদেশ দল দারুণ ক্রিকেট উপহার দিয়েছে।

মন্তব্য বন্ধ আছে তবে ট্র্যাকব্যাক ও পিংব্যাক চালু রয়েছে।