মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন আজ
আলোকিত লংগদু ডেক্সঃ
গ্রাম বাংলার ধুলোমাটি, সবুজ প্রকৃতি আর সাধারণ মানুষের সঙ্গে বেড়ে উঠেছেন শেখ হাসিনা।
শৈশবে শেখ হাসিনার শিক্ষা জীবন শুরু হয় গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ার একটি পাঠশালায়।
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হওয়ার পর সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় আসেন শেখ হাসিনা। পুরান ঢাকার মোগলটুলির রজনী বোস লেনে বসবাস শুরু করেন তারা। পরে বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য নির্বাচিত হলে ৩ নম্বর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে ওঠেন।
১৯৫৬ সালে টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন শেখ হাসিনা।
১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাড়িতে বসবাস শুরু করে জাতির পিতার পরিবার।
১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন শেখ হাসিনা।
১৯৬৭ সালে ঢাকার বকশী বাজারের ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এ কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজছাত্র সংসদের সহ-সভানেত্রী (ভিপি) পদে নির্বাচিত হন। তিনি এ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরের বছর সভাপতি ছিলেন।
একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন তিনি। শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একজন সদস্য এবং ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৩ সালে শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
কিশোর বয়স থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং ছয় দফা আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু উত্থাপিত ছয় দফা দাবিতে সেই সময়ের পূর্ব পাকিস্তানে এক অভূতপূর্ব গণজাগরণ সৃষ্টি হয়। শুরু হয় প্রচণ্ড দমন-নিপীড়ন, দায়ের করা হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। এ সময়টাতে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ওপর নেমে আসে অসহনীয় দুঃখ-কষ্ট।
কঠিন সেই সময়ে কারাবন্দি পিতার আগ্রহে ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শেখ হাসিনা। বিয়ের কিছুদিন পর শুরু হয় বাঙালি জাতির ১১ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে এসব আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কাল রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যায়। সে সময় বঙ্গবন্ধুর গোটা পরিবারকে ঢাকায় একটি বাড়িতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই গৃহবন্দি অবস্থায় শেখ হাসিনার কোলজুড়ে আসেন প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়। বিজয়ের পর ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন শেখ হাসিনা। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সন্তান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। এ সময় সৌভাগ্যক্রমে দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
১৯৭৫ সালের পর পরবর্তী বছরগুলোতে দেশের বাইরে নির্বাসিত জীবন কাটান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৮১ সালের শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ১৯৮১ সালের ১৭ মে সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এর পর থেকে টানা হাল ধরে আছেন আওয়ামী লীগের।
১৯৯৬ সালের শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। মাঝখানে বিরতি দিয়ে ২০০৯ সাল থেকে টানা ক্ষমতায় আছে দলটি। ২০০৯ সাল থেকে টানা তিনবারসহ চারবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মধুমতি নদী বিধৌত গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।