ধর্মীয় কোন উপাসনালয় ও নিরাপদ নয় পার্বত্য চট্টগ্রামে।

0 ৪১

ডেস্ক রিপোর্টঃ

শহীদ ওমর ফারুককে মসজিদ থেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে জেএসএস সন্ত্রাসীরা।
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী ওমর ফারুককে আজকের এই দিনে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। নিজ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাকে তার নিজের হাতে প্রতিষ্ঠিত মসজিদের সামনেই গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এক সময় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী এই পাহাড়ি ব্যক্তি ধর্মীয় বিশ্বাস পরিবর্তন করে পরিবারের সকল সদস্যসহ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। ধর্মান্তরের এই সিদ্ধান্তই যে তার জীবনের চরম মূল্য হয়ে দাঁড়াবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি ওমর ফারুক বা তার পরিবার। এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলে নতুন করে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে জেএসএস-এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। দীর্ঘদিন ধরেই পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, হত্যা, অপহরণসহ নানা অপরাধে যুক্ত রয়েছে জেএসএস। এবার তারা একজন নিরপরাধ ধর্মান্তরিত নাগরিককে কেবল তার বিশ্বাসের কারণে টার্গেট করে হত্যা করল, যা মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতার চরম লঙ্ঘন। স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়, ধর্মীয় সংগঠন এবং সাধারণ জনগণের মাঝে এই ঘটনা গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই হত্যাকাণ্ড শুধু একটি জীবননাশ নয়, বরং পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বিরুদ্ধে এক জঘন্য বার্তা বহন করে। ধর্মান্তরিত হওয়া একজন নাগরিকের প্রতি এই বর্বর আচরণ রাষ্ট্রের সংবিধান, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মানবাধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত। রাষ্ট্রকে এই চক্রান্তমূলক হত্যাকাণ্ডের যথাযথ তদন্ত করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ওমর ফারুকের আত্মত্যাগ আজ পাহাড়ের মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে—এই কি তবে ধর্মীয় স্বাধীনতার বাস্তবতা? সশস্ত্র উপজাতি সন্ত্রাসীদের এই অরুচিকর মনোভাব এবং ভয়ংকর হিংস্রতা দেশ ও জাতির জন্য হুমকি। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও ইসলামি সংগঠনগুলো। একইসঙ্গে ধর্মান্তরিত মুসলিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাহাড়ে সরকারি নজরদারি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি আরও জোরদার করার দাবি ওঠেছে। আজ ওমর ফারুক নেই, কিন্তু তার রক্ত যেন ব্যর্থ না যায়, তার জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রের দৃঢ় অবস্থান এবং বিচারের কঠোর বাস্তবায়ন।

আপনার ইমেইল প্রদর্শন করা হবে না।