জ্বালানি সাশ্রয়ে এলাকাভিত্তিক বন্ধ থাকবে শিল্প-কারখানা

৮২

জ্বালানি সাশ্রয়ে সপ্তাহের একেক দিন একেক এলাকার শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শিল্প-কারখানার মালিকরাও এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয়েছেন। দ্রুতই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। এতে দৈনিক প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

গতকাল রবিবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুৎ বিভাগ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বর্তমানে শিল্পাঞ্চলে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি কার্যকর রয়েছে। তবে এক দিনে সব এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি না দিয়ে যদি রেশনিংয়ের মাধ্যমে একেক দিন একেক এলাকায় ছুটি চালু করা যায় তাহলে বিদ্যুতের যথেষ্ট সাশ্রয় হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘যদি গাজীপুর এলাকা শুক্রবার বন্ধ থাকে, তবে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ এলাকা বন্ধ থাকল। পর্যায়ক্রমে এভাবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ধার্য করা গেলে দৈনিক ৫০০ থেকে ৫৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা যাবে। এতে তিনটা জিনিস লাভ হবে। বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে, গ্যাসের সাশ্রয় হবে এবং কারখানার সংশ্লিষ্ট যানবাহনের ক্ষেত্রেও সাশ্রয় হবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এই বিষয়টা নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা সবাই খুশি হয়েছেন। ’

বৈঠকের পর ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে দৈনিক প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। আমরা বলেছি, শুধু ঢাকাভিত্তিক নয়, সারা দেশেই এ রকম ছুটি কার্যকর করতে। ’

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পণ্য সরবরাহ ব্যয় বাড়বে। বাসের মতো ট্রাকের ভাড়াও নির্ধারণের দাবি জানান এফবিসিসিআই নেতারা।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি ফজলে শামীম আহসান বলেন, ‘একসময় যখন নিয়মিত লোড শেডিং হতো তখন এ ধরনের ছুটির ব্যবস্থা চালু ছিল। আমরা বলেছি, প্রয়োজনে সে ধরনের সূচি আবার চালু করা হোক। আর ডায়িং ও স্পিনিং কারখানাকে কিছুটা ছাড় দেওয়া যায় কি না, সেই প্রস্তাবও আমরা দিয়েছি। তবে এলাকাভিত্তিক কারখানা বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা মেনে নিলেও মন্ত্রণালয় থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। ’

আগামী অক্টোবর থেকে লোড শেডিং থাকবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবেলায় চলমান লোড শেডিং আগামী সেপ্টেম্বরে অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। আর আগামী অক্টোবর থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। তখন আর লোড শেডিং থাকবে না। ’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা উৎপাদন বাড়াব। গ্যাসের পরিমাণ বাড়িয়ে ব্যালান্স করার চেষ্টা করব। অক্টোবর থেকে পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারব। সবাইকে অনুরোধ করব, যেন একটু ধৈর্য ধরেন। ’

মন্তব্য বন্ধ আছে তবে ট্র্যাকব্যাক ও পিংব্যাক চালু রয়েছে।